পরিবেশ দূষণ ও তার প্রতিকার

 পরিবেশ দূষণ ও তার প্রতিকার  [ ২০১৩, '১৫]

ভূমিকা : আমাদের চারপাশের জগই হল পরিবেশ। বৃহত্তর অর্থে পরিবেশ বলতে
সমস্ত বিশ্বজগৎকেই বােঝানাে হয়। সুস্থ ও সুন্দর পরিবেশ মানুষকে ভালােভাবে বাঁচতে
সাহায্য করে। কিন্তু এভাবে পরিবেশ দূষিত হতে থাকলে একদিন সারা বিশ্ব থেকে মানুষ ও
অন্যান্য জীবজন্তু অবলুপ্ত হয়ে যাবে। তাই এই দূষণের আশু প্রতিকার বিশেষভাবে জরুরি।

পরিবেশ দূষণের কারণ :পরিবেশ দূষিত হয় মূলত চারটি কারণে। এগুলি হল—(১)
মৃত্তিকা দূষণের কারণে, (২) জল দূষণের কারণে, (৩) বায়ু দূষণের ফলে, ও (৪) শব্দ
দূষণের পরিপ্রেক্ষিতে। এগুলি দূষিত হলেই জীবজগৎ ভারসাম্য হারাবে। তাই এগুলির
দূষণের কারণ সম্পর্কে দৃষ্টিপাত করা যাক।
মৃত্তিকা দূষণের কারন গাছ আমাদের বাতাস তথা অক্সিজেন যােগায়। এই গাছ
eত জন্মায় ও বেড়ে ওঠে এবং ঝড়বৃষ্টি ও বন্যার থেকে ভূমিক্ষয় রােধ করে। কিন্তু
বেসভ্যতার কারণে দিন দিন গাছ কেটে ফেলায় ভূমিক্ষয় অনিবার্য হয়ে পড়েছে।
ডা, অধিক পরিমাণে ফসল পাওয়ার লােভে মানুষ অত্যাধিক রাসায়নিক সার মাটিতে
যাগ করছে। এর ফলে মাটির উর্বরতা শক্তি ধীরে ধীরে নষ্ট হয়ে মৃত্তিকার দূষণ ঘটছে।
জল দুষণের কারণ ও ফলঃ বাঁচতে হলে সর্বপ্রথমেই সকলের প্রয়ােজন জল।
এজন্য জলের আর এক নাম জীবন। গাছ বৃষ্টিকে আকর্ষণ করে। গাছ কেটে ফেলায়
অণ্ডলে অক্সিজেনের পরিমাণ কমে যাচ্ছে। অক্সিজেন কমে যাওয়ার ফলে বৃষ্টির পরিমাণও
আমে যাচ্ছে। বিভিন্ন জনপদ বা শহরে নানা বর্জ্য পদার্থগুলি জলের সঙ্গে মিশে যাচ্ছে।
শহরাঞ্চলের কলকারখানা থেকে নির্গত হওয়া বিভিন্ন রাসায়নিক বস্তু জলের সঙ্গে মিশে
হাওয়ায় জল দূষিত হচ্ছে। এই দূষিত জলপান করে মানুষ ও জীবজন্তু মৃত্যুমুখে পতিত হচ্ছে।

বায়ু দূষণের কারণ ও প্রতিফলঃ এরপরেই আসে বায়ু দূষণের প্রসঙ্গ। গাছ কাটার
কারণে কার্বন ডাইঅক্সাইডের পরিমাণ বাড়ছে বলেই বাতাসে উষ্ণ তাপমাত্রা দিন দিন
বেড়ে চলেছে। এর সঙ্গে যােগ হয়েছে বিভিন্ন কলকারখানার বিষাক্ত গ্যাস ও ধোঁয়া
ইত্যাদি। এই কারণে মানুষ আজ নানা ধরনের ব্যাধির কবলে পড়ে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
শব্দ দূষণের কারণ ও ফলাফল : শব্দ দূষণও আজকের দিনে বড় সমস্যা হিসাবে
দেখা দিয়েছে। নানা কারখানার যান্ত্রিক শব্দ, কিংবা ট্রেন, বাস, মােটরগাড়ি, মিনিবাস,
ট্যাক্সি প্রভৃতির কর্ণবিদারী হর্নের আওয়াজ পরিবেশকে শব্দদূষণময় করে তুলেছে। এছাড়া।
আছে নানা আতসবাজির ও মাইকের গগনভেদী রব। তাই নানা শব্দের আওয়াজে মানুষ
স্নায়ুরােগে আক্রান্ত হচ্ছে। রক্তচাপ, বধিরতা ইত্যাদি ব্যাধিও তাদের ঘিরে ধরছে।
 প্রতিকারের সম্ভাব্য বিষয় নিয়ে আলােচনা : পরমাণু বিস্ফোরণের ফলে আকাশ,
বীতাস, জল ও মাটি দূষিত হচ্ছে। এজন্য ১৯৮৭ সালে ব্রাজিলের রিও ডি জেনিরােতে
বসুন্ধরা সম্মেলনে পারমাণবিক জঞ্জাল নিরসনে একটি জনমত গড়ে তােলার চেষ্টা হয়।
রাষ্ট্রসংঘের নির্দেশে প্রতি বছর ৫ই জুন বিশ্ব পরিবেশ দিবস পালিত হচ্ছে। বিভিন্ন দেশের
জাতীয় স্তরে পরিবেশ সংস্থা গঠিত হয়েছে। পরিবেশ দূষণরােধে নানা আইন-কানুন ও
পরিবেশ সংরক্ষণ নীতি গৃহীত হয়েছে। ভারতবর্ষেও এই দূষণ রােধের জন্য বলিষ্ঠ পদক্ষেপ
নেওয়া হয়েছে।
প্রতিকারের সম্ভাব্য উপায় :পরিবেশকে এইসব ভয়ংকর বিপদজনক অবস্থা থেকে
বাঁচতে হলে কিছু ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়ােজন। সেগুলি হল—(১) সর্বপ্রথমেই জনসাধারণকে
পিরবেশের বিপদ সম্পর্কে অবহিত করে তাদের সচেতন করে তােলা; (২) শুধুমাত্র
আইন তৈরি করে নয় তার যথার্থ প্রয়ােগ করে দূষণ রােধের প্রচেষ্টা চালাতে হবে;
৩) বিভিন্ন আবর্জনাকে কাজে লাগিয়ে ভিন্নভাবে তার ব্যবহার করা; (৪) অধিক পরিমাণে
সুজন ও তার সংরক্ষণের অধিকমাত্রায় ব্যবস্থা করা; (৫) পাকা বা স্যানিটারি পায়খানার
হচ্ছে।
ব্যবস্থা করা; (৬) যানবাহনের গতি ও হর্নের শব্দ নিয়ন্ত্রণ করা; এবং (৭) তেজস্ক্রিয়
পদার্থের ব্যবহার ও তার অপসারণ সম্পর্কে যথেষ্ট সতর্কতা অবলম্বন করা।
উপসংহার : পরিবেশ দূষণ বর্তমানের একটি বহু আলােচিত বিষয়। তাই এ ব্যাপারে
আমাদের সকলকেই দায়িত্ব নিতে হবে। মনে রাখতে হবে, বিজ্ঞানের বহু ব্যবহার করতে
গিয়ে আমরা আমাদের সভ্যতার সংকট ডেকে এনেছি। মানবজাতি ও অন্যান্য জীবজন্তুর
অবলুপ্তির পথ প্রশস্ত করেছি।




মাটি দূষণ প্রতিরোধের উপায়
পরিবেশ দূষণ কবিতা
শব্দ দূষণ ও তার প্রতিকার
জল দূষণ ও তার প্রতিকার pdf
আমাদের পরিবেশ রচনা
পরিবেশ সংরক্ষণের উপায়
পরিবেশ দূষণ রোধে জনসচেতনতা
পরিবেশ দূষণের কারণ কি কি
পরিবেশ দূষণ ও তার প্রতিকার উক্তি
পরিবেশ দূষণ রোধে ইসলামের ভূমিকা
পরিবেশ দূষণ ও প্রাকৃতিক দূর্যোগ
পরিবেশ রক্ষায় প্লাস্টিক বর্জন রচনা
পরিবেশ রক্ষায় ছাত্র ছাত্রীদের ভূমিকা
পরিবেশ দূষণ নিয়ে প্রতিবেদন
পরিবেশ দূষণ ও তার প্রতিকার প্রকল্প
আর্সেনিক দূষণের উপসংহার
গ্রামের পরিবেশ দূষণ
সমুদ্র দূষণ রচনা
পরিবেশ ও আমরা রচনা
শব্দ দূষণ উপসংহার
উন্নয়ন বনাম পরিবেশ বাংলা রচনা
প্রাত্যহিক জীবনে জল রচনা

No comments:

Post a Comment

|| সারমর্ম ঃ দেবী অন্নপূর্ণা গাঙ্গিনীর তীরে এসে মাঝিকে পার করে দেবার জন্য আহ্বান জানান। নদীর ঘাটে ঈশ্বরী পাটুনী নামে এক মাঝি তার ডাকে সাড়া ...