দৈনন্দিন জীবনে বিজ্ঞান। অথবা, সভ্যতায় বিজ্ঞানের দান/অবদান

দৈনন্দিন জীবনে বিজ্ঞান।
অথবা,
সভ্যতায় বিজ্ঞানের দান/অবদান   [২০১২, '১৪, '১৬]

ভূমিকাঃ বিশেষভাবে অজ্ঞানই হল বিজ্ঞান। আরও স্পষ্টভাবে বলা যায় নিয়মিত।
পর্যবেক্ষণ ও গবেষণার ফলে কোনাে বিষয়ে ক্রমানুলব্ধ জ্ঞানই হল বিজ্ঞান। বর্তমান যুগে
আধুনিক সভ্যতার ভিত্তিভূমিই হল বিজ্ঞান। তাই বিজ্ঞানের মূল লক্ষ্য হল মানব সভ্যতার
বিকাশ ও বিন্যাস।
মানবসভ্যতায় বিজ্ঞান : মানুষই হল বিশ্বের মূল বা প্রধান। মানুষ না থাকলে সমাজ,
সভ্যতার সৃষ্টিও সম্ভব ছিল না। তাই মানুষই হল সবকিছুর উৎসমূল। আবার বিজ্ঞানের
সৃষ্টি, জয়যাত্রা তথা প্রয়ােগের স্থানও নিয়ন্ত্রিত হয় মানুষের দ্বারাই। তাই মানবকল্যাণ ও
মানবসভ্যতার উন্নতিই বিজ্ঞানের প্রথম ও প্রধান লক্ষ্য।

বিজ্ঞানের আবিষ্কার ও মানুষের ভাবনার পরিবর্তনঃ আগে মানুষ প্রকৃতির শক্তির
কাছে ছিল অত্যন্ত নিরুপায়। প্রকৃতির রুদ্ররােষে তার অসহায় অবস্থাই প্রকাশ পেত। তাই
কোনাে বিপদ ঘটলে কিংবা অসুস্থ হলে মানুষ একে দৈবরােষ কিংবা নিজের অদৃষ্টদোষ
হিসাবে মেনে নিতে বাধ্য হত। বিজ্ঞানের প্রয়ােগ বেড়ে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে মানুষের
ভাবনা-চিন্তায়ও পরিবর্তন ঘটল। তাই বিজ্ঞানের নানা অবদান আমাদের প্রতিদিনের জীবনে
এক বিরাট ভূমিকা গ্রহণ করেছে।
প্রতিদিনের জীবনে বিজ্ঞানের ভূমিকা: দিনরাত্রির চব্বিশ ঘণ্টাই আমরা বিজ্ঞানের।
দ্বারা উপকৃত। সকালে ঘুম থেকে উঠেই টুথপেস্ট দিয়ে দাঁত মেজে, হিটার বা গ্যাসের
উনুনে তৈরি চা পান করতে ব্যস্ত হয়ে পড়ি। এর সঙ্গে সঙ্গেই প্রতিদিনের সংবাদপত্র
আমাদের কাছে এসে হাজির হয়। এর মাধ্যমে সারা বিশ্বের খবর সম্পর্কে অবহিত হই।
কর্মক্ষেত্রে যেতে কিংবা স্কুল-কলেজে যেতে আমরা ট্রাম, বাস, ট্যাক্সি, অটো বা ট্রেনের।
সাহায্য নিয়ে থাকি। কর্মক্ষেত্রে ফ্যানের হাওয়া কিংবা শীততাপনিয়ন্ত্রিত যন্ত্র আমাদের।
শরমের কবল থেকে রক্ষা করে সুষ্ঠভাবে কাজ করার পরিবেশ তৈরি করে দেয়। কর্মক্ষেত্রে।

স্কুল-কলেজে ব্যবহৃত নানা স্টেশনারী দ্রব্য, কমপিউটার বা ক্যালকুলেটর আমাদের।
পরিশ্রমকে অনেকখানি লাঘব করে দেয়।
| বিজ্ঞানের অবদান বিনােদনের অঙ্গ ও সন্ধ্যায় ঘরে ফিরে সারাদিনের ক্লান্তি নাশ।

তে আমরা রেডিও, রেকর্ডপ্লেয়ারে গান শুনি কিংবা বর্তমানের শ্রেষ্ঠ বৈদ্যুতিন মাধ্যম
দূরদর্শনে নানা প্রােগ্রাম দেখে অবসর বিনােদন করি। টেলিফোন, বিশেষত স্মার্টফোন,

আজকের দিনে বিজ্ঞানের এক আশ্চর্য উপহার। এর মাধ্যমে ছবি তােলা, গান শােনা, কিংবা কোন কিছুর সম্পর্কে জানতে নেট খুঁজেও আমরা সময় কাটাই। এতে অবসর
বিনােদন ও আনন্দ দুই-ই পেয়ে যাই।।

স্বাচ্ছন্দ্য দানে বিজ্ঞানের ভূমিকা : পােশাক-পরিচ্ছদের ক্ষেত্রে বিজ্ঞান নানা ধরনের
বৈচিত্র্য এনেছে। সাধারণ সুতাের পাশাপাশি টেরিলিন, টেরিকট, পলিয়েস্টার বা নাইলনের
বহু বস্ত্রসম্ভার আমাদের পছন্দের পসরা সাজিয়েছে। সেগুলিকে পরিষ্কার ও ধােপদুরস্ত
করার জন্য ওয়াশিং মেশিন ও ইলেকট্রিক ইস্ত্রির ব্যবহার নিশ্চিত করে দিয়েছে। এছাড়া,
ফসলের উৎপাদন বাড়াতে নানা সার ও কীটনাশক ঔষধ বিজ্ঞান তৈরি করেছে। বিজ্ঞানের
জন্যই নিত্য নতুন ঔষধ আবিষ্কার এবং মানুষের চিকিৎসার জন্য নানা ধরনের যন্ত্রপাতি
বিজ্ঞানই এনে গিয়েছে। প্রসঙ্গত গৃহনির্মাণের ও স্বাচ্ছন্দ্যের জন্য বিজ্ঞান নানা উপকরণ
আমাদের কাছে পৌঁছে দিয়ে আমাদের জীবনকে সহজ ও সুন্দর করে তােলার প্রচেষ্টা
চালিয়েছে বা চালাচ্ছে।
| অত্যধিক বিজ্ঞান নির্ভরতার কুফল ও বিজ্ঞান নানাভাবে আমাদের উপকার করেছে।
বা করছে। কিন্তু কিছু কিছু ক্ষতিও করছে। অত্যধিক বিজ্ঞান নির্ভরতার কারণে আমরা
নিজেদের স্বাভাবিক কর্মক্ষমতা হারিয়ে ফেলেছি। নিজেদের তৈরি করে ফেলেছি যন্ত্ররূপে।
অন্যের আছে, কিন্তু আমার নেই—এমন কৃত্রিম অভাববােধে কষ্টও পাচ্ছি। সর্বোপরি
বিজ্ঞান মানবজীবনের আবেগ কেড়ে নিয়েছে।।
উপসংহার : প্রত্যেক জিনিসেরই ভালাে ও মন্দ দিক আছে। বিজ্ঞানকে ধ্বংসের
কাজে না লাগিয়ে তাকে উন্নয়নের কাজে লাগালে মানুষ ও তার সৃষ্ট সভ্যতার উন্নয়ন
অধিকতর প্রশস্ত হয়ে মানবকল্যাণকে ত্বরান্বিত করতে সমর্থ হবে একথা অস্বীকার করা
যাবে না।


বিজ্ঞানের আবিষ্কার অনুচ্ছেদ
প্রাত্যহিক জীবনে বিজ্ঞান বই
চিকিৎসা ক্ষেত্রে বিজ্ঞানের অবদান রচনা
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির অবদান
বিজ্ঞানের ভূমিকা
দৈনন্দিন বিজ্ঞান
বিজ্ঞানের অপব্যবহার রচনা
চিকিৎসা ক্ষেত্রে বিজ্ঞান রচনা
বিজ্ঞান সম্পর্কে কবিতা
বিজ্ঞান বিষয়ক কবিতা
রচনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
বিজ্ঞানের গুরুত্ব
রচনা চিকিৎসা ক্ষেত্রে বিজ্ঞান
বাংলা রচনা সাহিত্য পাঠের প্রয়োজনীয়তা
সংবাদপত্র পাঠের প্রয়োজনীয়তা রচনা
পরিবেশ রক্ষায় ছাত্র সমাজের ভূমিকা রচনা
বাংলার উৎসব রচনা
পরিবেশ দূষণ ও তার প্রতিকার
রসায়ন শাস্ত্রে মুসলমানদের অবদান
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিতে মুসলিম মনীষীদের অবদান

No comments:

Post a Comment

|| সারমর্ম ঃ দেবী অন্নপূর্ণা গাঙ্গিনীর তীরে এসে মাঝিকে পার করে দেবার জন্য আহ্বান জানান। নদীর ঘাটে ঈশ্বরী পাটুনী নামে এক মাঝি তার ডাকে সাড়া ...