অভিসারের পূর্ব প্রস্তুতি || সারমর্ম



সারমর্ম : শ্রীরাধিকা কৃষ্ণের আহ্বান উপেক্ষা করতে পারেন না। কৃষ্ণের বংশীধ্বনির মধ্যে যে আহ্বান তাতে সাড়া দিয়ে শ্রীরাধা অভিসারের মধ্য দিয়ে গােপন নির্দিষ্ট স্থানে মিলিত হবার চেষ্টা করছেন বা প্রস্তুতি নিচ্ছেন। বহু দুর্যোগপূর্ণ পথ অতিক্রম করে শ্রীরাধাকে মিলিত হতে হবে কৃষ্ণের সাথে। কিন্তু সেজন্য পূর্বপ্রস্তুতির প্রয়ােজন। তাই শ্রীরাধা স্বগৃহের
নিকটবর্তী স্থানে দুর্গম পথ অতিক্রমণের নিরীক্ষায় রত। তার এই প্রাক-অভিসার প্রস্তুতিপর্ব
কিছুটা অভিনব বটে। অভিসারের পথ কণ্টকময়। শ্রীরাধা স্বেচ্ছায় পথে কাঁটা বিছিয়ে
রেখেছেন যাতে তার পদ্মফুলের মতাে কোমল শ্রীপদপল্লব ক্ষত-বিক্ষত হলেও তিনি দুর্গম,
কন্টকময় পথে চলার শক্তি, সাহস ও অভিজ্ঞতা অর্জন করবেন। পায়ের নূপুরের শব্দে
সচেতন হয়ে যাতে আত্মীয়-পরিজনেরা তাকে বাধা দিতে না পারে সেজন্য তিনি নিঃশব্দে
চলার অভ্যাস করছেন। কাপড়ের ছেড়া টুকরাে দিয়ে তিনি পায়ের নূপুর বেঁধে রাখছেন।
শুধু তাই নয়, পিচ্ছিল পথে চলার অভ্যাস করতে গিয়ে তিনি কলসির জল ঢেলে পথ
পিচ্ছিল ও কর্দমাক্ত করে তুলছেন। পায়ের আঙুল চেপে চেপে তিনি চলার অভ্যাস
করছেন। এসব কিছুই কৃষ্ণ বা হরির উদ্দেশ্যে অভিসারের জন্য রাধার কঠোর প্রয়াস।
গভীর রাতে দুস্তর পথ অতিক্রম করার জন্য রাধার এই কঠোর প্রয়াস। গভীর রাতে দুস্তর
পথ অতিক্রম করার জন্য রাধা স্বগৃহে রাত জাগার অভ্যাস করছেন। দুহাতে চোখ ঢেকে
তিনি অন্ধকারে পথ চলার অভ্যাস করছেন। পথে সর্পভয় নিবারণের জন্য তিনি সাপের
ওঝার কাছে সর্পবন্দনার মন্ত্র শিখছেন। আবার অন্যদিকে গুরুজনদের বাক্য তিনি শুনছেন
অথবা কৌশলে এক কথার অন্য উত্তর দিচ্ছেন। পরিজনের কথায় তিনি বিহুল মুগ্ধার মতাে হাসেন। এই সবকিছুর মানস-সাক্ষী স্বয়ং গােবিন্দদাস।

No comments:

Post a Comment

|| সারমর্ম ঃ দেবী অন্নপূর্ণা গাঙ্গিনীর তীরে এসে মাঝিকে পার করে দেবার জন্য আহ্বান জানান। নদীর ঘাটে ঈশ্বরী পাটুনী নামে এক মাঝি তার ডাকে সাড়া ...