বাগবিধি বাগধারা

১।আ-ক-খ (প্রাথমিক জ্ঞান)—যন্ত্র সম্পর্কে কোন অ-আ-ক-খ জ্ঞান নেই অথচ
নিজেকে যান্ত্রিক বলে পরিচয় দিয়ে ধীরেন খুব বিপদে পড়েছিল।
২।অকালকণ্ড (অপদার্থ ব্যক্তি)—হরিহরের মতাে অকালকুষ্মাণ্ডকে দিয়ে কোনাে
কাজ হতে পারে না।
৩। অক্কা পাওয়া (মরে যাওয়া—লঘু অর্থে)—বুড়ির অক্কা পাওয়ার সময় হয়েছে,

তবুও ঝগড়াটে স্বভাব যায়নি।
৪। অকুলপাথার (গভীর সংকটময় অসহায় অবস্থা)—মাতাপিতার মৃত্যুর পর নির্বান্ধব

ভাইবােন দুটি অকূলপাথারে ভাসতে লাগল।
৫। অকূলে কূল পাওয়া (বিপদ হতে মুক্তির আশা)—আমার এই দুঃসময়ে তােমাকে

দেখে অকূলে কূল পেলাম।
৬। অগত্যযাত্রা (চিরকালের মতাে বিদায়)—তিনি যুদ্ধক্ষেত্র হতে আর ফিরলেন না;

যেন অগস্ত্যযাত্রা করলেন।
৭। অগ্নিশর্মা (অত্যন্ত ক্রুদ্ধ )—আফিং নেই শুনলে দাদু অগ্নিশর্মা হয়ে উঠবেন।
৮। অতি দর্পে হত লঙ্কা (অহঙ্কার করলে পতন হয়)—আমরা সবাই জানি অতি দর্পে।
| হত লঙ্কা।
১। অতি লােভে তাঁতি নষ্ট (অতি লােভের ফল ভালাে হয় না)—রামবাবু নির্বাচনে

দাঁড়িয়ে সর্বস্বান্ত হলেন, অতি লােভে তাঁতি নষ্ট। | [উঃ মাঃ ২০১২]
১০। অথৈ জল (দুরন্ত বিপদ)—একে বিদেশে আছি, তার উপর হাতে একটাও পয়সা
নেই—আমি অথৈ জলে পড়লাম।

১১। অন্ধকারে ঢিল মারা (অনমানের উপর নির্ভর করা)—এরকম অন্ধকারে ঢিল ছুড়লে।
অপরাধী ধরা পড়বে না।

১২।অন্ধের যষ্ঠি(একমাত্র সম্বল)–স্বজন পরিত্যক্ত বৃদ্ধের কাছে পুরানাে ভৃত্যটি অন্ধের যষ্ঠী।
১৩। অমাবস্যার চাঁদ (যার দর্শন পাওয়া যায় না)-গ্রাম ছেড়ে শহরে গিয়ে এখন
আমাদের কাছে সে অমাবস্যার চাদ হয়ে গিয়েছে। 
১৪। অমৃতে অরুচি (ভালাে জিনিসে অনিচ্ছা)–আগে সবকিছু চেয়ে খেতে, এ
দিলেও খায় না—যেন অমৃতে অরুচি।
১৫। অরণ্যে রােদন (নিল আবেদন)—যুদ্ধলিপ্সু মানুষের কাছে জনগণের শাস্তির আবেদন
অরণ্যে রােদন ছাড়া আর কী!
১৬। অর্ধচন্দ্র দেওয়া (গলাধাক্কা দেওয়া)-প্রবঞ্চক সন্ন্যাসীকে গ্রামের লােকেরা অচল দিয়ে বিতাড়িত করল।

১৭। অষ্টরম্ভা (শূন্য, কিছুই নয়)—অধিকাংশ লােক মুখে অনেক বড় বড় কথা বলে, কিন্তু
কাজের সময় অষ্টরম্ভা।

১৮। অহিনকুল সম্পর্ক (তীব্র শত্রুতা)—দুই প্রতিবেশীর মধ্যে অহি-নকুল সম্পর্ক, কেউ।

কারও মুখ দেখে না।
১৯। আঁতে ঘা (মনে আঘাত দেওয়া)—ও রকম আঁতে ঘা দিয়ে কথা বলা উচিত নয়।
২০। আকাশকুসুম (অবাস্তব কল্পনা)—তীব্র সংকটের দিনে আকাশকুসুম কল্পনা করে

লাভ নেই।
২১। আকাশ থেকে পড়া (বিস্মিত হওয়া)—পিতার মৃত্যুর কথা শুনে তিনি একেবারে

আকাশ থেকে পড়লেন।
২২। আকাশ-পাতাল (বিরাট পার্থক্য)—সাহস এবং দুঃসাহসের মধ্যে আকাশ-পাতাল প্রভেদ।
২৩। আক্কেল গুড়ুম-(কিংকর্তব্যবিমূঢ় )—অর্ণবের হাতের লেখা দেখে আমার আক্কেল
গুড়ুম হয়ে গেল।
২৪। আক্কেল সেলামি (অনভিজ্ঞতার দণ্ড)—পরের দায় ঘাড়ে নিয়ে অনেক টাকা আক্কেল
সেলামি দিলাম।

২৫। আবােলতাবােল (বাজে কথা)—এরকম আবােলতাবােল কথার মাথামুণ্ডু কিছুই।
 বুঝলাম না।
২৬। আষাঢ়ে গল্প (কাল্পনিক কাহিনি)—এরকম আষাঢ়ে গল্প শুনতে চাই না।


২৭। আমড়া কাঠের টেকি (অপােত্ত)—সুধীরকে কোন কাজের দায়িত্ব দিয়ে লাভ নেই।

সে একটা আমড়া কাঠের টেকি, সব পণ্ড করে ছাড়বে।
২৮। আলালের ঘরের দুলাল (বিত্তশালী ঘরের নিষ্কর্মা আদুরে ছেলে)—নরেন আলালে।

ঘরের দুলাল, দেখতেই রাজপুত্র গুণের বেলায় শূন্য।
২৯। আঠারাে মাসে বছর (দীর্ঘসূত্রতা)—ননীকে দিয়ে এত তাড়াতাড়ি কাজ করানো।

যাবে না, তার তাে আঠারাে মাসে বছর।
৩০। ইচড়ে পাকা (অকালপক্ক)—হঁচড়ে পাকা ছেলে এই বয়সেই বিড়ি ধরেছে।

No comments:

Post a Comment

|| সারমর্ম ঃ দেবী অন্নপূর্ণা গাঙ্গিনীর তীরে এসে মাঝিকে পার করে দেবার জন্য আহ্বান জানান। নদীর ঘাটে ঈশ্বরী পাটুনী নামে এক মাঝি তার ডাকে সাড়া ...